সংসার ভেঙে গেলো শবনম ফারিয়ার
অবশেষে ভেঙে গেলো অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার সংসার। গত ২৭ নভেম্বর হারুন রশীদ অপুর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করেন তিনি। খবরটি ফেসবুকের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন ফারিয়া নিজেই।
জানা গেছে, চলতি বছরের প্রথম দিক থেকেই শবনম ফারিয়ার সংসার ভাল চলছিল না। কয়েক মাস আগেই তাদের বিচ্ছেদের গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। তবে তখন তারা বিষয়টিকে ভিত্তিহীন ও গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
শেষমেশ সেই গুঞ্জন সত্য হলো। ফারিয়া জানান, তাদের বিচ্ছেদের পেছনে নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। তারা দু’জন অনেক দিন ধরেই অনুভব করছেন যে, তাদের একসঙ্গে থাকা সম্ভব নয়।
ফেসবুকে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়ে ফারিয়া বলেন-
মানুষের জীবন নদীর মতো। কখনও জোয়ার, কখনও ভাটা। কখনও বৃষ্টিতে পানি বেড়ে যায়, শীতকালে পানি শুকিয়ে যায়। আমাদের জীবনেও এমনটা হয়!
আমাদের জীবনে কিছু মানুষ আসে; কেউ কেউ স্থায়ী হয়, কেউ কেউ কিছু কারণে স্থায়িত্ব ধরে রাখতে পারে না।
আমার মা সব সময় একটা কথা বলে, আল্লাহর হুকুম ছাড়া একটা গাছের পাতাও নড়ে না, আমরা শুধু চেষ্টা করতে পারি। ঠিক সেভাবেই আমি আর অপু অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করেছি একসাথে থাকতে। কিন্তু বিষয়টা একটা পর্যায়ে খুব কঠিন হয়ে যায়। মানুষ কি বলবে ভেবে নিজেদের উপর একটু বেশিই টর্চার করে ফেলছিলাম আমরা। জীবনটা অনেক ছোট, এতো কষ্ট নিয়ে বেঁচে থাকার কি দরকার? এইটা ভেবে আমরা এ বছরের শুরু থেকেই সিদ্ধান্তে আসি আমরা আর একসাথে থেকে কষ্টে থাকতে চাই না।
তাও বছর খানেক সময় নিয়েছি পরস্পরকে বুঝতে। ফাইনালি আল্লাহ্ যা করেন ভালোর জন্যেই করেন ভেবে আমরা আমাদের প্রায় আড়াই বছরের বৈবাহিক জীবনের অবসান ঘটিয়ে আবারও ৫ বছরের পুরানো বন্ধুত্বে ফিরে গিয়েছি।
বিবাহে বিচ্ছেদ হয়, কিন্তু ভালবাসার বিচ্ছেদ নেই, বন্ধুত্বের বিচ্ছেদ নেই। যতদিন বেঁচে আছি আমাদের ভালবাসা ও বন্ধুত্ব থাকবে।
শুধুমাত্র বৈবাহিক বন্ধন থেকে আমাদের সম্পর্কের ইতি টেনে নিলাম।এ ঘটনা আমাদের জীবনের গতি হয়তো রোধ করবে, ছন্দপতন করবে কিন্তু জীবন তো থেমে থাকবে না।
অপুর জন্যে আমার অনেক অনেক দোয়া, ভালবাসা আর শুভ কামনা। আমরা যে সুখের জন্যে আলাদা হলাম আমরা যেন সে সুখ খুঁজে পাই। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমাদের কখনও ভালবাসা কিংবা বিশ্বাসের অভাব ছিল না, হবেও না। আর আমার প্রিয় সাংবাদিক ভাই/বোনদের উদ্দেশ্যে একটাই অনুরোধ, দয়া করে একটু মানবিকতার সাথে বিষয়টা দেখবেন! প্লিজ!
দুজন মানুষের বিবাহ্ বিচ্ছেদ মানে, দুইটা পরিবারের বিচ্ছেদ, অনেক স্মৃতির বিচ্ছেদ! অনেক ভালো সময়ের সাথে বিচ্ছেদ এইটা কারও জন্য সুখকর অনুভূতি না। দয়া করে মুখরোচক অদ্ভুত সংবাদ প্রকাশ করে আমাদের আর বিব্রত করবেন না। আমরা একে অন্যের উপর সম্পূর্ণ সম্মান বজায় রাখতে চাই!
ধন্যবাদ
অপু-ফারিয়া
উল্লেখ্য, গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি বেশ বড় আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিয়ে করেন শবনম ফারিয়া ও হারুন অর রশীদ অপু।বিয়ের পর থেকে তাদের নানা খুনসুটি আর কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। তবে শবনম ফারিয়া বরাবরই সেসবকে কড়া জবাবে প্রতিহত করেছিলেন। কিন্তু সংসারটিকে টিকিয়ে রাখতে পারলেন না এ অভিনেত্রী।
জানা গেছে, গত ২৭ নভেম্বর স্বেচ্ছায় বিচ্ছেদ পত্রে সই করেন দুজনে। এই বিচ্ছেদের পেছনে তেমন কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি। ফলে একে অপরের প্রতি কোনো অভিযোগও নেই।