দ্বিতীয় দফায় ভাসানচরের পথে ১৮০৪ রোহিঙ্গা
নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজারের ঘিঞ্জি শরণার্থী শিবির থেকে স্বেচ্ছায় দ্বিতীয় দফায় ৪২৭টি পরিবারের এক হাজার ৮০৪ জন রোহিঙ্গা ।গতকাল সোমবার এসব রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার ক্যাম্প থেকে চট্টগ্রামে আনা হয়। নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেওয়া হবে। আজ মঙ্গলবার সকালে নোয়াখালীর ভাসানচরের উদ্দেশে যাত্রা করেছে। চট্টগ্রাম থেকে আজ সকালে তারা পাঁচটি জাহাজে করে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা।
রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো যেমন এর বিরোধিতা করছে, তেমনি নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে দেশি-বিদেশি নানা সংস্থা। সরকার ১ লাখ রোহিঙ্গার জন্য নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার ভাসানচরে পরিকল্পিত আবাসনসহ আধুনিক জীবন-যাত্রার ব্যবস্থা করে রেখেছে। পর্যায়ক্রমে নির্ধারিত রোহিঙ্গাদের এখানে স্থানান্তর করা হবে।
এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির থেকে স্থানান্তরের প্রথম ধাপে বঙ্গোপসাগরের দ্বীপ ভাসানচরে যান এক হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা।
দ্বিতীয় দফায় ভাসানচরের উদ্দেশে যাওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১৩০ জন আছে, যাদের আত্মীয়-স্বজন কিংবা পরিবার এরই মধ্যে গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ভাসানচরে গেছে। তারা বলছে, পরিবারের কাছ থেকে ফোনে খবর পেয়েছে যে, সেখানে থাকা–খাওয়ার ব্যবস্থা খুবই সুন্দর ও ভালো পরিবেশ। সেজন্য তারা সেখানে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পর্যায়ক্রমে ১ লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে। রোহিঙ্গাদের এই দলটি থাকবে সেখানকার অত্যাধুনিক আবাসন প্রকল্পে। এরই মধ্যে ভাসানচরে মজুদ করা হয়েছে তিন মাসের খাদ্যপণ্য।
সরকারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সামছুদ্দৌজা বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য সেখানে মহিষ, ভেড়া, হাঁস, কবুতর পালন করা হচ্ছে। আবাদ করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি।পরীক্ষামূলকভাবে ধান চাষও করা হচ্ছে। প্রকল্পটিতে যেন ১ লাখ ১ হাজার ৩৬০ শরণার্থী বসবাস করতে পারেন সে লক্ষ্যে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হয়েছে। ১২০টি গুচ্ছগ্রামে ঘরের সংখ্যা ১ হাজার ৪৪০টি।
তিনি বলেন, সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোটামুটি ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এর আগে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা তিন শতাধিক রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে ভাসানচরে নিয়ে রাখা হয়েছিল।
এরপর গত ৫ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধি দলকে দেখার জন্য ভাসান চরে পাঠানো হয়। তারা ফেরার পর তাদের কথা শুনে রোহিঙ্গাদের একাংশ ভাসান চরে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করে বলে জানান তিনি।