অবশেষে বাড়ির আঙিনায় দেখা মিলেছে সু চি-র
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সেনা অভ্যুত্থানের পর প্রথমবারের মতো মিয়ানমারের নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চি-কে দেখতে পেয়েছেন প্রতিবেশিরা। মঙ্গলবার সকালে বাড়ির সীমানা প্রাচীরের মধ্যে তাকে শনাক্ত করা গেছে বলে জানিয়েছেন তার রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটির লিগ (এনএলডি)-এর প্রেস কর্মকর্তা কিয়াই টোয়ে।
এর আগে সোমবার ভোরে অন সান সু চি এবং ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের আটক করে দেশটির সেনাবাহিনী।তবে আটককৃতদের কোথায় রাখা হয়েছে তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনলডি’র এক আইনপ্রণেতা জানিয়েছেন, রাজধানী নেপিদোর সরকারি বাসভবনে তাকে গৃহবন্দি করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছেন তারা।
ইয়াঙ্গুন ভিত্তিক বিশ্লেষক খিন জাও উইন বলেছেন, এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে সু চি নিরাপদে আছেন। সব খবরেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে তিনি বিপদের মধ্যে নেই। তবে সামরিক সরকার তাকে আড়ালে রাখার কৌশল নিয়েছে বলে মনে করছেন অস্ট্রেলিয়ার লোয়ি ইনস্টিটিউটের হার্ভে লেমাহিয়েও।
তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে খুব সম্ভবত পরিকল্পনা হলো তাকে জনগণের দৃষ্টি থেকে আড়ালে রাখা… তাকে নেপিদোতে রাখা হয়েছে… যেসব জায়গায় প্রতিবাদ বিক্ষোভ হতে পারে তার থেকে অনেক দূরে। আমার মনে হয় এটা ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে।’ সু চিকে ভালোভাবে রাখাতে সামরিক বাহিনীর স্বার্থ আছে বলেও মনে করেন এই বিশ্লেষক।
গত নভেম্বরের নির্বাচনে অং সান সুচির এনএলডি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু সেনাবাহিনী নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তোলে।
সোমবার নবনির্বাচিত সংসদের প্রথম বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেনাবাহিনী অধিবেশন স্থগিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় । বৈঠক শুরুর প্রাক্কালে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
সেনা সরকার আমলে আটক থাকা অং সান সু চির জন্য নতুন কিছু নয়। সাবেক জান্তা সরকারের আমলে ইয়াঙ্গুনের একটি লেক পাড়ের বাড়িতে ১৫ বছর গৃহবন্দি থেকেছেন তিনি। সেখান থেকেই ১৯৯০ এর দশকে তিনি হয়ে ওঠেন গণতন্ত্রের আলোকবর্তিকা, জেতেন নোবেল শান্তি পুরস্কার। সোমবার ভোরের আলো ফোটার আগে তাকে আটকের ঘটনা অনেককেই সেই স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দেয়।
এদিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতারের পর এক বছরের জন্যে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি এবং একজন জেনারেলকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।
সামরিক প্রধান ও অভ্যুত্থানের নেতা মিন উং লাইং দেশ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন। সাবেক জেনারেল মিয়ন্ট সুই ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।