প্রখ্যাত কোরিয়ান পরিচালক কিম কি-দুকের মৃত্যু
বিনোদন ডেস্ক : সমসাময়িক চলচ্চিত্র বিশ্বের আলোচিত নির্মাতা, দক্ষিণ কোরিয়ার পরিচালক কিম কি-দুক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
কোরিয়া হেরাল্ড জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে লাটভিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার কিম কি-দুকের মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।
লাটভিয়ার ডেলফি নিউজের বরাত দিয়ে রাশিয়ার বার্তা সংস্থা স্পুৎনিক লিখেছে, গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে লাটভিয়ায় যান কিম। সেখানে তার স্থায়ীভাবে থাকার আগ্রহ ছিল।কিন্তু কয়েকটি অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকায় তার খোঁজ পড়ে। পরে জানা যায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তিনি হাসপাতালে।
লাটভিয়ার ডকুমেন্টারি নির্মাতা ভিটালি মানস্কির বরাত দিয়ে হাসপাতালে কিমের মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে ডেলফি নিউজ।
১৯৬০ সালের ২০ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ার বোংঘোয়ায় কিম কি-দুকের জন্ম।কঠিন এক শৈশব পার করে নব্বইয়ের দশকের শুরুতে তিনি পাড়ি জমান প্যারিসে।সেখানে ফাইন আর্টসে লেখাপড়া করার সময়ই তার শিল্প ভাষা একটি রূপ পেতে থাকে।
পরে দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিরে চিত্রনাট্য লেখার কাজে হাত দিয়ে ১৯৯৫ সালে কোরিয়ান ফিল্ম কাউন্সিলের পুরস্কার পান কিম কি-দুক।পরের বছর মুক্তি পায় তার প্রথম সিনেমা ‘ক্রোকোডাইল’।
এর পরের বছরগুলোতে সব মিলিয়ে ২৫টি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন এই কোরীয় নির্মাতা।২০০০ সালে তার ‘দ্য আইল’ সিনেমাটি টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবে সমালোচকদের নজর কাড়ে।একই বছর মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হয় ‘রিয়েল ফিকশন’।
এরপর স্প্রিং সামার ফল উইন্টার… অ্যান্ড স্প্রিং, থ্রি আয়রন, সামারিটান গার্ল, দ্য বো আর ড্রিমের মত সিনেমা কিম কি-দুকের স্বতন্ত্র শিল্প ভাষার সঙ্গে চলচ্চিত্র বিশ্বকে পরিচয় করিয়ে দেয়।
২০০৪ সালে সামারিটান গার্ল সিনেমার জন্য বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এবং একই বছর থ্রি আয়রন সিনেমার জন্য ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা পরিচালকের পুরস্কার পান কিম।
মাঝে কিছুদিন বাজে সময়ের মুখোমুখি হতে হয় এই পরিচালককে। প্রায় দুই বছর তিনি সিনেমা বানাতে পারছিলেন না। পরে সেই সময়ের নিজেকে নিয়েই বানিয়ে ফেলেন ডকুমেন্টারি আরিরাং। ২০১১ সালে আরিরাং কান চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ পুরস্কার পায়।
২০১২ সালে প্রথম দক্ষিণ কোরীয় সিনেমা হিসেবে কিমের পিয়েতা ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে গোল্ডেন লায়ন পুরস্কার জিতে নেয়।
তবে অনেক কোরীয় সিনেমার মত কিমের চলচ্চিত্রেও প্রাণীর প্রতি নির্মমতার দৃশ্য এসেছে, যা বাইরের দুনিয়ায় সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। কিম নিজেও সে বিষয়ে নিজের অনুতাপের কথা বলেছেন।
২০১৭ সালে এক অভিনেত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠলে কিম কি-দুককে আর দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। পরের বছর তার বিরুদ্ধে ওই মামলা বাতিল হয়ে যায়।