কোভ্যাক্স থেকে ১ কোটি ২৭ লাখ ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক : কোভ্যাক্স থেকে সোয়া এক কোটি ডোজ পেতে পারে বাংলাদেশ। আর সেটি আগামী পাঁচ মাসে অর্থাৎ জুন পর্যন্ত পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। চলতি বছরে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে এই করোনা টিকার প্রথম চালান আসবে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) কোভ্যাক্স বিভিন্ন দেশে টিকা বণ্টনের যে তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায় জুনের শেষ নাগাদ বাংলাদেশ কোভিড-১৯ টিকার ১ কোটি ২৭ লাখ ৯২ হাজার ডোজ পেতে যাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এই টিকা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত টিকা বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নেতৃত্বাধীন এই প্ল্যাটফর্ম। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে যেসব টিকা ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে তুলনামূলকভাবে অক্সফোর্ডের টিকাই বাংলাদেশে সংরক্ষণ সহজ।
যদিও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদন এখনও দেয়নি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে তাদের মূল্যায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে এই টিকা।
তালিকা প্রকাশ করে বলা হয়েছে জুনের শেষ নাগাদ বাংলাদেশ ১২ দশমিক ৮ মিলিয়ন বা এক কোটি ২৭ লাখ ৯২ হাজার ডোজ কোভিড-১৯ টিকা পেতে যাচ্ছে। এ ছাড়া ভারতকে ৯৭ দশমিক ২ মিলিয়ন, পাকিস্তানকে ১৭ দশমিক ২ মিলিয়ন, নাইজেরিয়াকে ১৬ মিলিয়ন, ইন্দোনেশিয়াকে ১৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন ও ব্রাজিলকে ১০ দশমিক ৬ মিলিয়নসহ বিভিন্ন দেশকে বিভিন্ন পরিমাণে টিকা দেবে কোভ্যাক্স।
বছরের প্রথম তিন মাসের মধ্যেই ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার ১২ লাখ ডোজ পাওয়ার আশা করছে কোভ্যাক্স। বাংলাদেশও ফাইজারের টিকা পেতে ইচ্ছুক বলে এই প্ল্যাটফর্মকে জানিয়েছিল। তবে প্রথম দফায় ফাইজার যে পরিমাণ টিকা দেবে, সেখান থেকে বাংলাদেশের পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছে না কোভ্যাক্স। অন্যদের মধ্যে ভুটান ও মালদ্বীপ প্রথম ধাপেই ফাইজারের টিকা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ফাইজারের টিকাটি মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার নিচে সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো থাকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে কোভ্যাক্স।
কোভ্যাক্সের আওতায় সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে যেসব টিকা আসার কথা সেগুলোর মধ্যে ৩৫-৪০ শতাংশ চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক এবং ৬০-৬৫ শতাংশ দ্বিতীয় প্রান্তিকে পাওয়া যাবে।
এর আগে গত ২০ জানুয়ারি ডব্লিউএইচওর সহকারী মহাপরিচালক মারিয়াঞ্জেলা সিমাও জানান করোনাভাইরাসের টিকা সবাই পাবেন। তিনি বলেন টিকা পাওয়া নিয়ে কারও আতঙ্কিত হওয়া উচিত নয়। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ নাগাদ করোনার টিকার প্রথম চালান কোভ্যাক্স উদ্যোগে যুক্ত দেশগুলোতে পৌঁছাবে।
সিমাও বলেন, বিশ্বের সব মানুষের টিকাপ্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থাটি কাজ করছে।
সিমাও আরো বলেন, বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশ করোনার টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে। সেগুলোর মধ্যে ৪০টির বেশি ধনী দেশ রয়েছে। ধনী-গরিব নির্বিশেষে করোনার টিকার ন্যায্য বণ্টন নিশ্চিত করতে কোভ্যাক্স নামের বৈশ্বিক উদ্যোগে যৌথ নেতৃত্ব দিচ্ছে ডব্লিউএইচও বলে জানান তিনি।
বিশ্বের ১৮০টির বেশি দেশ ইতোমধ্যে কোভ্যাক্স উদ্যোগে যুক্ত হয়েছে। ২০০ কোটি ডোজ করোনার টিকা পেতে পাঁচটি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোভ্যাক্সের চুক্তি হয়েছে। উদ্যোগে যুক্ত প্রতিটি দেশের ২০ শতাংশ মানুষের জন্য চলতি বছরের শেষ নাগাদ টিকা সরবরাহ করতে চায় কোভ্যাক্স।